বেনাপোল স্থলবন্দরে স্থায়ীভাবে পানি নিষ্কাশন সম্ভব নয়

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৫, ০০:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ

দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে গঠন করা হয়েছে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি। এই কমিটির উদ্যোগে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বুধবার বেলা ১১ টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর রাত পর্যন্ত ৭০ শতাংশ পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়েছে। এখনো পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা চলছে। তবে খোদ বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে বন্দরের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ীভাবে পানি নিষ্কাশন সম্ভব নয়।

১০ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকালে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ড্রেন ব্যবস্থা ও পুরোনো ড্রেন সংস্কারের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল কাস্টমস, বন্দর, রেলওয়ে ও পৌরসভা সমন্বিতভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার সমস্যা থাকলেও এবার তা স্থায়ীভাবে সমাধানের লক্ষে সবাই একসাথে কাজ শুরু করেছেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার, কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম, সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) ফয়সাল আহসান সজীব, রেলওয়ে সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা মো. চাঁদ আহমেদ, পৌরসভার প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন, বন্দর প্রকৌশলী আবুল খায়ের, রেলওয়ে পুলিশ উপ পরিদর্শক আমিনুল হক, বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের (৯২৫) সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদ আলী, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।

শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদ আলী বলেন, আমরা বেনাপোল বন্দরের পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি স্থায়ী সমাধান চাই। এর জন্য প্রয়োজন হলে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ড্রেন ব্যবস্থা ও স্থায়ী সমাধানের পথ খুজতে হবে।

স্থলবন্দরে উপ পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, স্থায়ীভাবে সমাধান করতে হলে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগবে এবং বর্তমানে রেলওয়ে তাদের নিজস্ব তদারকিতে পানি নিষ্কাশন করবে, সাথে কাস্টমস তারাও তাদের মত পানি নিষ্কাশন করবে এবং রেলওয়ের কাজকে গতিশীল করতে বন্দরের জমে থাকা ও বৃষ্টির পানি বের করতে দিতে হবে। স্থায়ী কোনো প্রকল্প না হলে এ পানি নিষ্কাশনের সঠিক সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়।

এ ছাড়াও বুধবার (৯ জুলাই) বেনাপোল পৌরসভা, কাস্টম হাউস ও বন্দর এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষে একটি ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সভাপতি হয়েছেন বেনাপোল পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। সদস্য হিসেবে রয়েছেন কাস্টম হাউস, স্থলবন্দর, রেলওয়ে এবং স্থানীয় গণ্যমান্য একজন ব্যক্তি ও নির্বাহী প্রকৌশলী।

স্থানীয়রা আশা করছেন, এ সমন্বিত উদ্যোগ ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে এবং ভবিষ্যতে বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্যক্রম বাধাহীনভাবে পরিচালিত হবে।

উল্লেখ্য টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দরে কোটি কোটি টাকার পণ্য পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারনে বন্দরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বিপুল পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের মধ্যে রয়েছে আমদানিকৃত বিভিন্ন ধরনের কাগজ, টেক্সটাইল ডাইস, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, বন্ডের আওতায় গার্মেন্টসের আমদানিকৃত কাপড়, সুতাসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত কাঁচামাল।